
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে “জুলাই সনদ”। দীর্ঘ আলোচনার পর শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই সনদে স্বাক্ষর করেছে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। তবে, ঐকমত্যের এই মুহূর্তে স্বাক্ষর থেকে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি এনসিপি।
দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এই প্রস্তাবের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা সনদে সই করিনি, কারণ এর আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন কাঠামো এখনো অনির্দিষ্ট।”
এনসিপির দাবি, সনদে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বা গণভোটের বাধ্যতামূলক নিশ্চয়তা স্পষ্ট নয়। তাদের মতে, এই নিশ্চয়তা ছাড়া স্বাক্ষর দেওয়া মানে জনগণকে আরেকটি “রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির কাগজ” ধরিয়ে দেওয়া।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিনটি মূল শর্তও —তাদের প্রথম শর্ত, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’-এর পূর্ণ খসড়া আগে প্রকাশ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আদেশ জারি করতে হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্বাক্ষরে, যাতে আইনি বৈধতা নিশ্চিত হয়। আর শেষে, গণভোটে জনগণের অনুমোদনের পরই সনদটি কার্যকর হবে এবং সেই আদেশের ভিত্তিতেই গঠিত হবে নতুন সংসদ, যা জনগণের প্রদত্ত ‘গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent Power)’ প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সংবিধান ২০২৬ প্রণয়ন করবে।
এনসিপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, “আমরা কোনো প্রতীকী পদক্ষেপের অংশ হতে চাই না। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কাঠামো না দেখলে স্বাক্ষর নয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই অবস্থান তাদের নীতিগত দৃঢ়তা ও প্রক্রিয়ামুখী রাজনীতির প্রতিফলন। যেখানে অন্যান্য দলের আপত্তি মূলত রাজনৈতিক অবস্থানভিত্তিক, সেখানে এনসিপি প্রশ্ন তুলছে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতা নিয়ে
আবার কারো কারো মতে, এই অবস্থান হয়তো সাময়িকভাবে সনদের ঐক্যকে শিথিল করবে, তবে এটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের আলোচনাকে আরও কাঠামোগত দিকেই নিয়ে