এ দেশের মানুষ পিআর বোঝে না, মেনেও নেবে নাঃ মির্জা ফখরুল
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বোঝে না এবং গ্রহণও করবে না। একটি রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির নামে নির্বাচন বিলম্ব করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই পিআর ব্যবস্থার প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছুই এই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।”


রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল আলম মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভাটি ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।


মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল পার করছি। গত ১৫ বছর ধরে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও আত্মাকে ধ্বংস করেছে। জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আজ দেশকে একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি।”


তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে বারবার অপপ্রচার চালানো হয় যে, তারা নাকি সংস্কারের বিরোধী। অথচ বিএনপির জন্মই হয়েছে রাজনৈতিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন।


পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণের কোনো ধারণা নেই। এমনকি অনেক সংসদ সদস্যও এটি বুঝেন না। একটি দল শুধু নির্বাচন বিলম্ব করার জন্যই এই পদ্ধতির প্রসঙ্গ তুলেছে। সংস্কার কমিশন থেকেও এ ধরনের প্রস্তাব আসেনি।”


তিনি আরও বলেন, “সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরাও চাই নির্বাচন দ্রুত হোক, গণতন্ত্র ফিরুক। রাতারাতি দেশ বদলে ফেলা সম্ভব নয়, কিন্তু প্রক্রিয়া শুরু হোক, সেটাই জনগণের প্রত্যাশা।”


বিএনপি মহাসচিব মনে করেন, এখন সকলের দায়িত্ব বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা। তিনি বলেন, “কিছু মানুষ আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমরা জানি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কারণেই আজ আমরা নতুন রাষ্ট্র ও নতুন চিন্তার কথা ভাবতে পারি। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা আজও রাজপথে আছেন। আমাদের দায়িত্ব, এই রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা।”


স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।