মেসির জোড়া গোলে মায়ামির বড় জয়, আলবার অশ্রুশিক্ত বিদায়
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

হার্ড রক স্টেডিয়ামের স্ট্যান্ডে একদিন আগেও দর্শক আসনে বসে ছিলেন লিওনেল মেসি। সহজ-স্বস্তির হাসি মুখে। কিন্তু পরের ভোরেই যখন মাঠে নেমে এলেন, তখন যেন সেই হাসিটা রূপ নিল আগুনে। আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি যেখানে তাঁকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন, সেখানে মায়ামির কোচ তাঁকে তুলে নিলেন লড়াইয়ের কেন্দ্রে। ফলাফল, একটি নাটকীয়, আবেগে ভরা ৪–০ গোলের জয়, যেখানে মেসির পায়ে ফুটেছে জাদু, জর্দি আলবার চোখে ঝরেছে অশ্রু।


চেজ স্টেডিয়ামের আলো যখন গাঢ় হয়ে উঠছিল, তখনও গোলশূন্য ছিল ম্যাচ। দর্শকসারিতে উৎকণ্ঠার গুঞ্জন। ৩৯ মিনিটে হঠাৎ করেই সময় থমকে গেল। ডান প্রান্তে বল পেলেন মেসি, সামনে দুই ডিফেন্ডার, কিন্তু তাঁদের কাটিয়ে এমন এক শট। যেন সময়ের ক্যানভাসে আঁকা এক নিখুঁত রেখা! গোলপোস্টের জালে বল জড়াতেই স্টেডিয়াম ফেটে পড়ল চিৎকারে, আবারও মায়ামির নায়ক সেই এক মানুষ—লিওনেল মেসি।


বিরতির পর খেলার গতি আরও তীব্র। ৫২ মিনিটে তাঁর পুরোনো সঙ্গী জর্দি আলবাকে দিলেন এক পরিমিত পাস। আলবা থামালেন, তাকালেন, তারপর গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠালেন। এই অ্যাসিস্টের সঙ্গে মেসির ক্যারিয়ারে যোগ হলো ৩৯৬তম অ্যাসিস্ট, আর মাত্র চারটি অ্যাসিস্ট তাহলেই ৪০০ এর মাইলফলক!


এরপর ৬১ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের শটে এল তৃতীয় গোল। মেসি তখনও থামেননি। ৮৭ মিনিটে আবারও আলবার পাস, আবারও মেসির গোল। যেন বন্ধুত্বের শেষ সিম্ফনি বাজল মাঠে। একজনের পায়ে পাস, অন্যজনের পায়ে গোল।


এরপরই মঞ্চটা হয়ে উঠল আবেগে ভেজা। ম্যাচ শেষে মায়ামি ক্লাব বিদায় জানাল তাদের স্প্যানিশ তারকা জর্দি আলবাকে। স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় চলল তাঁর ফুটবলজীবনের ভিডিও। চোখে জল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আলবা। পাশে মেসি। হাত রাখলেন বন্ধুর কাঁধে। হয়তো দুজনের মনে একই প্রশ্ন “এত বছর পেছন থেকে পাসগুলো দিত কে?”


আলবা বললেন, “এই ভিডিওটা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল আমার সেরা সময়গুলোতে। আমি কৃতজ্ঞ। এই ক্লাব, এই মানুষগুলো, এই বন্ধুত্বের জন্য।”


মায়ামির সাপোর্টার্স শিল্ডের স্বপ্ন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এই ম্যাচ যেন ছিল এক আবেগঘন বিদায়ী কবিতা। মাঠে জাদু, গ্যালারিতে করতালি, আর মাঝখানে এক বন্ধুত্বের গল্প—যা ফুটবলকেও ছাড়িয়ে যায় মানবিকতার উষ্ণতায়।