চুয়াডাঙ্গায় খেজুর রসের প্রস্তুতি শুরু, শীতকে বরণে ব্যস্ত গাছিরা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

শীত আবহ শুরু হবে একটু পরে, তবে শিশির ভেজা ঘাস, কুয়াশাপূর্ণ সকাল এসবই প্রভাতের আগমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই সময়ে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন অঞ্চলে খেজুর গাছিরা প্রায় ঢালিয়ে পড়েছেন খেজুর গাছ প্রস্তুতির কাজে। কোমরে ডোঙা বেঁধে, হাতে ধারালো দা নিয়ে নিপুণ দক্ষতায় গাছ চাঁচছি তারা কারণ সময় থাকতে গাছ প্রস্তুত করতে হবে, সুস্বাদু রস-গুড়-পাতালি সংগ্রহ করা যাবে।


চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার গ্রামগুলোতে এখন গাছিরা দিনভর কাজ করছেন। কেউ গাছ তুলছেন, কেউ পরিচর্যা করছেন, কেউবা গাছের সোনালি অংশ চাঁচ দিচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এসব গাছে নলি বসিয়ে রস সংগ্রহ শুরু হবে। গাছিরা আশা করছেন আগাম রস সংগ্রহ করতে পারলে রস, গুড় ও পাটালি ভালো দামে বিক্রি করে তারা ভালো লাভ অর্জন করতে পারবে।


বাংলা শীতের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত এই খেজুর রস ও গুড়ের চাহিদা গ্রামবাংলায় বরাবরই ছিল। শীত যত বাড়বে, রসের মিষ্টতাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে এই বিশ্বাস গাছির মধ্যে প্রবল। তারা বলছেন, “কাকডাকা ভোরে রস সংগ্রহ শুরু হবে, সন্ধ্যায় গাছ পরিচর্যা করা হবে” এই কাজ চলবে প্রতিদিন।


তবে এই ঐতিহ্যবাহী পেশা এখন বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে। জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ন ও খেজুর গাছ রক্ষায় অনীহার কারণে বহু গ্রামেই খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। যেখানে একসময় সারি সারি খেজুর গাছ ছেয়ে থাকতেন, আজ সেখানকার জমি ফাঁকা পড়ে আছে।


খেজুর গাছ শুধু রস ও গুড়ের উৎসই নয় বাংলার কৃষি সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও লোকজ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। খেজুর পাতাও ব্যবহৃত হয় জ্বালানি ও নানা কাজে। এ বছর যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে গাছিরা আশা করছেন, খেজুর রসের মৌসুম হবে সফল ও লাভজনক।