
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বিকাল ৫টায়। নির্বাচনের উত্তেজনা শুধু ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায়। বিনোদপুর, কাজলা, চারুকলা, হরিজনপল্লী ও মেহেরচণ্ডী এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সহ রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীরা স্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়েছেন। তারা দাবি করছেন, শিক্ষার্থীদের “উৎসব ভাগাভাগি” করার নির্দেশে তারা এভাবে উপস্থিত রয়েছেন।
গতকাল বুধবার থেকে বিনোদপুর এলাকায় তাদের শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান শুরু হয়। রাতভর জমায়েত বড় হতে থাকে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই তারা ওই এলাকাগুলোতে অবস্থান করছেন ও হালকা কর্মকাণ্ড করছেন , চলেছে খাওয়াদাওয়া, আলোচনাসহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর সংলগ্ন রাস্তায় বাঁ পাশে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন, এবং দক্ষিণ পাশে জামায়াত শিবিরের শামিয়ানা দেখা গেছে।
ক্যাম্পাসের দক্ষিণ দিকে বেতার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় জামায়াতের নেতা–কর্মীরা কিছুটা আড়ালে মিলিত হয়েছেন। স্থানীয় একজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, “খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে, তবে কোনো অস্ত্র নেই।”
বিএনপির শামিয়ানার নিচে অবস্থান করা বয়ালিয়া থানার সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, “আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। ১৭ বছর কোনো ভোট হয়নি। ক্যাম্পাসে ভোট হচ্ছে সাড়ে তিন যুগ পরে, তাই আমরা উৎসব উদযাপনে এখানে আছি, কোনও ধরনের ঝামেলা করার উদ্দেশ্য নয়।”
শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাকিব আলী বললেন, “বহু বছর পর ভোট হচ্ছে, আমরা রাবিয়ান। মহানগর নেতাদের নির্দেশে এখানে আছি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নিচ্ছি।”
মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, “জামায়াত নেতাদের উপস্থিতি থাকায় আমরা ওই এলাকায় সজাগ রয়েছি, যেন তারা প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।”
একই সময়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ আমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেন, “মেইন গেটের বিপরীতে প্রকাশ্যে জামায়াত–শিবিরের লোকজন অস্ত্র বিতরণ করছে।” তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে দেখা গেছে, শামিয়ানা ছায়ায় ছোট ছোট দলগুলোর মধ্যে সাধারণভাবে খাওয়াদাওয়া ও আলোচনা চলছে। জামায়াতের এক কর্মী মো. লিটু বলেন, “রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে আমরা এখানে একত্র হয়েছি, খাবার দিচ্ছি। কোনো অস্ত্র নেই।”
উল্লেখ্য, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে, এসব দাবির ভিত্তি নেই এবং ভিডিওটি একটি অস্পষ্ট ভিডিও থেকে তৈরি গুজব। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচারে বিষয়টির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।