
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
গোপালগঞ্জ জেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি মুকসুদপুর কলেজে এবারের ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে প্রতিষ্ঠানটি থেকে মোট ১,৫৮১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে এর মধ্যে মাত্র ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বাকি ১,২১৪ জন শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে, যা পাসের হার মাত্র ২৩.২২ শতাংশ।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, পুরো কলেজ থেকে মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এমন ফলাফলে শুধু শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নয়, অভিভাবকরাও বিস্ময় ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই এই ফলাফলকে কলেজের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করছেন।
এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা, অধ্যয়নে আগ্রহের অভাব, আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতির ঘাটতি এবং পর্যাপ্ত অনুশীলনের অভাব এই সবই ফলাফলের পিছনে বড় কারণ হতে পারে। স্থানীয় অভিভাবকরাও একমত পোষণ করে বলেন, আগে যেখানে মুকসুদপুর কলেজ ভালো ফল করতো, সেখানে এবারকার এই ভেঙে পড়া ফলাফল তাদের গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে।
এদিকে অনেক অভিভাবকই এই ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, এত বড় পরিমাণে শিক্ষার্থীর ফেল করাটা স্বাভাবিক নয়। ফলাফল পুনঃনিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনে শিক্ষাবোর্ডের কাছে আবেদন জানাবেন বলেও অনেকে জানিয়েছেন।
তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের মতে, এবছরের পরীক্ষা হয়েছে সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে। সেজন্য প্রকৃত মেধা ও প্রস্তুতির ভিত্তিতেই ফলাফল এসেছে। যারা নিয়মিত অধ্যয়ন করেছে, তারাই কেবল পাশ করতে পেরেছে।
একজন শিক্ষক বলেন, “এই ফলাফল আমাদের শিক্ষা বাস্তবতায় বড় ধরনের একটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। হয় আমরা শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো প্রস্তুত করতে পারিনি, নয়তো তারা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকমতো নেয়নি। এখন সময় এসেছে শিক্ষা পদ্ধতি ও মনোভাব দুই দিক নিয়েই নতুনভাবে চিন্তা করার।”