রাকসু নির্বাচনঃ ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে, আমদানি করা কালির মান নিয়ে প্রশ্ন
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট প্রদান শেষে আঙুলে দেওয়া অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন একাধিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।


ভোট দেওয়ার পর প্রথম এই অভিযোগ উঠে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনের ভোটারদের কাছ থেকে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু আল হেলাল বলেন, ‘ঘষা দিলে কালি উঠে যাচ্ছে। পানি দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাবে।’ একই অভিযোগ করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরান। তিনি বলেন, ‘কালিটা উঠে যাচ্ছে। এটা যদি পার্মানেন্ট হতো, তাহলে ভালো হতো। যদিও জালিয়াতির সুযোগ কম, তবুও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার ছিল।’


ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজাও অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী অমোচনীয় কালির ব্যাপারে অভিযোগ করছেন। এটা মুছে যাওয়ার কথা ছিল না। আমরা কমিশনকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’


তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আমরা ভেরিফাই করব। কালি উঠে যায় কি না, তা চেক করা হয়নি। এটা আমাদের দায়িত্ব না।’ একই বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে শহীদুল্লাহ্ ভবন পরিদর্শনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা কয়েকটি স্তরে। কালি হচ্ছে শেষ ধাপ। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।’


এর আগে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা কামাল আকন্দ জানান, শুধু অমোচনীয় কালি নয়, তারা তিন স্তরের (থ্রিডি লেভেল) নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন। প্রতিটি ভোটারকে ইউনিক আইডির মাধ্যমে শনাক্ত করা হচ্ছে, যাচাই করা হচ্ছে ছবিযুক্ত ভোটার আইডি, আর সন্দেহ হলে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ কিউআর কোড। তিনি আরও বলেন, উন্নতমানের পার্মানেন্ট কালি আমদানি করা হয়েছে, যাতে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না ওঠে।


তবে বাস্তবে কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ নির্বাচনের এই নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে তারা আনন্দিত, কিন্তু এমন প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।