
ছবিঃ সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন খুনের ১৮ ঘণ্টা পরও মামলা হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা করছে, প্রেমঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। নিহত জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
সহপাঠী ও পুলিশের তথ্যমতে, ভবনটির একটি বাসায় এইচএসসির এক ছাত্রীকে পড়াতেন জোবায়েদ। তাঁর লাশ উদ্ধারের পর ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বংশাল থানায় নেয় পুলিশ।
জোবায়েদের পরিবার অভিযোগ করেছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে মামলা করার চেষ্টা করলেও সোমবার সকাল পর্যন্ত মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ। নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত জানান, তাঁরা ছাত্রীসহ ছয়জনের নামে মামলা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বংশাল থানার ওসি এতজনের নামে মামলা না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এতজনের নামে মামলা দিলে মামলা “হালকা হয়ে যাবে।”
তবে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা নিতে তারা প্রস্তুত। পরিবার যাঁদের নামে মামলা দিতে চান, পুলিশ মামলা নেবে। পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রী বলেছেন, তিনি গত এক বছর ধরে জোবায়েদের কাছে পড়তেন এবং তাঁকে পছন্দ করতেন। বিষয়টি তাঁর ‘বয়ফ্রেন্ড’ জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হন এবং সম্পর্ক ছিন্ন করার পর প্রতিশোধ নিতে জোবায়েদকে খুন করেন। এই তরুণ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন এবং আরমানিটোলাতেই থাকেন।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যাকাণ্ডে আরও দুই-একজন জড়িত থাকতে পারেন। সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন দুজনকে পালাতে দেখা গেছে।
নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন বলেন, “আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। মামলা নিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।”
এদিকে হত্যার ঘটনায় গতকাল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক, শাঁখারীবাজার, জজকোর্ট, রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতীবাজার মোড়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা বংশাল থানার সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং রাতভর অবস্থান শেষে সকালে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।