
পাকিস্তান–আফগানিস্তান সীমান্তে আবারও দাউ দাউ করে জ্বলছে সংঘাতের আগুন। শনিবার রাতভর সীমান্তজুড়ে পাকিস্তান সেনা ও তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে হয়েছে তীব্র গোলাগুলি। এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা পৌঁছেছে চরমে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারিজমি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের লাগাতার বিমান হামলার জবাবেই তালেবান চালিয়েছে ‘সফল প্রতিশোধমূলক অভিযান’। অন্যদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভির দাবি, আফগান বাহিনী বিনা উসকানিতে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে, আর পাকিস্তান সেনারা তার জবাবে দিয়েছে দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া।
এদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, আফগান বাহিনীর অতর্কিত গুলিবর্ষণের পর তারা ধ্বংস করেছে অন্তত উনিশটি আফগান সামরিক ঘাঁটি, নিহত হয়েছে পঞ্চাশেরও বেশি তালেবান যোদ্ধা। অন্যদিকে, কাবুলের অভিযোগ, বিমান হামলার মাধ্যমে পাকিস্তান নিয়মিত তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে।
ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তিন প্রতিবেশী ইরান, কাতার এবং সৌদি আরব। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, “দুই দেশকেই সংযম প্রদর্শন করতে হবে, কারণ সীমান্তের স্থিতিশীলতাই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি।” কাতার ও সৌদি আরবও এক যৌথ আহ্বানে জানিয়েছে, সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান সম্ভব।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই সীমান্তে সন্ত্রাসী হামলার হার বেড়েছে কয়েকগুণ।ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগান ভূখণ্ড থেকে টিটিপি ও আইএস জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তানে, তবে কাবুল সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত এখন আর শুধু সীমান্তের নয়, বরং গোটা দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্যই এক ভয়াবহ হুমকি। এখন দেখার বিষয়, দুই প্রতিবেশী কি সংযম দেখাবে, নাকি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত সময়ের ব্যাবধানে আবারও পরিণত হবে এক নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে?