
এশিয়া কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে আবারও শেষ মুহূর্তের হতাশা বাংলাদেশের! রোমাঞ্চে ভরা ম্যাচে হংকংয়ের কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে গেছে লাল-সবুজরা। তিন ম্যাচ শেষে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে অবস্থান এখন বাংলাদেশের।
ম্যাচের শুরুটা ছিল আশাব্যঞ্জক। ১৩তম মিনিটেই হামজা চৌধুরীর নিখুঁত ফ্রি-কিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গ্যালারি তখন উল্লাসে ভাসছে, মনে হচ্ছিল জয়টা হাতের মুঠোয়। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তেই আত্মঘাতী এক ভুলে সমতায় ফেরে হংকং।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয় ভুলের মিছিল। ৫০তম মিনিটে সোহেল রানার ব্যাকপাস কাজে লাগিয়ে গোল করেন রাফায়েল মেরকিস। তারপর পাল্টা আক্রমণে আরও একটি গোল। মেরকিসের জোড়া আঘাতে ৩-১ এ পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ।
তবুও হাল ছাড়েনি কাবরেরার দল। ৮৪তম মিনিটে শেখ মোরসালিন গোল করে আশা জাগান, আর যোগ করা সময়ে মোরসালিনের ক্রসে হেডে সমতা ফেরান শমিত সোম। জাতীয় স্টেডিয়াম তখন উৎসবের রঙে রাঙা। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশিক্ষণ। শেষ বাঁশির আগে আবারও বাংলাদেশের জালে বল জড়িয়ে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন রাফায়েল মেরকিস। হার নিশ্চিত, আর ভেঙে যায় লক্ষাধিক সমর্থকের হৃদয়।
ম্যাচ শেষে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে খেলোয়াড় পরিবর্তন সব নিয়েই প্রশ্ন। প্রবাসী জায়ান আহমেদ, যিনি নামার পর মাঠে গতি ফিরিয়ে আনেন, তাকে কোচ নামান ৭৫ মিনিটে এসে! সামিত সোম ও জামাল ভূঁইয়াকেও প্রথমার্ধে বসিয়ে রাখেন তিনি।
কিন্তু সমালোচনার মুখে কোচ ক্যাবরেরা জানালেন নিজের অবস্থান। তিনি বলেন, “প্রথমার্ধটাই ছিল বাংলাদেশের সেরা খেলা, তাই বলা যায় লাইনআপ ঠিকই ছিল।” তিনি আরও বলেন, “দায়টা সবার, আমিও নিচ্ছি, পাশাপাশি দলেরও দায় রয়েছে।”
তবে ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে, বারবার কৌশলগত ভুল আর দেরিতে নেওয়া সিদ্ধান্তই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। ৪৫ বছর পর এশিয়া কাপে খেলার যে স্বপ্ন জেগেছিল হামজা-শমিতদের পারফরম্যান্সে, সে আলো এখন ম্লান, কিন্তু শেষ নয়।
আগামী অ্যাওয়ে ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। আর সমর্থকেরা এখনও আশায়, হয়তো এবার ফিরবে সেই হারানো আত্মবিশ্বাস।