
বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম জানিয়েছেন, গাজাগামী একটি জাহাজে অবস্থানকালে তাঁকে ও তাঁর সহযাত্রীদের মাঝসমুদ্রে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তিনি দাবি করেছেন, তাঁরা ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর দ্বারা অপহরণের শিকার হয়েছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।
ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, “আমি শহিদুল আলম, বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। আপনারা যদি এই ভিডিও দেখে থাকেন, তাহলে শুনুন—আমাদের সাগরে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে। এরা সেই দেশের বাহিনী, যারা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতায় গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যায়।”
শহিদুল আলম যে ‘কনশেনস’ নামের জাহাজে ছিলেন, সেটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (TMTG) নৌবহরের অংশ। জাহাজটিতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, চিকিৎসাকর্মী ও অধিকারকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। এটির উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভেঙে গাজার দিকে অগ্রসর হওয়া এবং মানবিক সহায়তা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
গতকাল মঙ্গলবার শহিদুল আলম ফেসবুকে এক পোস্টে জানিয়েছিলেন, তাঁরা আজ ভোরে ‘রেড জোনে’ পৌঁছাতে পারেন। এই রেড জোন বলতে তিনি বোঝাচ্ছিলেন সেই বিপজ্জনক অঞ্চল, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী কিছুদিন আগে ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের আরেকটি নৌবহর আটক করে এবং অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, গাজায় চলমান দুই বছরব্যাপী যুদ্ধে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ওপরও দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেকে আটক হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।