
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছে। অনুমোদিত তিনজন নাইটগার্ডের জায়গায় বর্তমানে মাত্র একজন নাইটগার্ড দিয়ে পুরো কমপ্লেক্সের রাতের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। এতে হাসপাতালের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটির প্রধান গেইট নিরাপত্তার স্বার্থে রাতের বেলায় বন্ধ রাখা হতো। তবে সম্প্রতি হঠাৎ করেই সেই গেইটটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাতে হাসপাতাল এলাকায় অবাধে লোকজন প্রবেশ ও বের হতে পারছে। এতে রোগী, কর্মচারী বিশেষ করে নারী রোগীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রাতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজন বলেন, “রাতে হাসপাতালের ফটক খোলা থাকে। বাইরে থেকে অনেকে আসে, আবার চলে যায়। একজন নাইটগার্ড একা এত বড় জায়গায় কীভাবে নিরাপত্তা দেবে?”
হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, “তিনজন নাইটগার্ডের অনুমোদন থাকলেও দুইজনকে ডিউটিতে রাখা হচ্ছে না। একজনকে দিয়ে পুরো রাতের দায়িত্ব করানো হচ্ছে, যা অমানবিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এতে শুধু নিরাপত্তা নয়, কর্মচারীর নিজের জীবনও বিপদের মুখে থাকে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও সেবাগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেছেন, গেইট খোলা রাখার মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সুবিধা পাচ্ছে। তাদের দাবি, প্রশাসনের অজ্ঞাতে বা অনুমতি ছাড়া গেইট খোলা রাখা এবং নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা কমানো দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. নাজমুল হাসান বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কেন একজন নাইটগার্ড দিয়ে দায়িত্ব করানো হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ বা ডিউটি পুনর্বিন্যাস করা হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়া প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও তদারকির অভাবের প্রতিফলন। তারা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।